জিম্মিদের ১৮ ঘন্টার দুঃস্বপ্ন
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
সামনে বন্দুকধারী। যাদের মধ্যে কোন মানবতা নেই, নেই শুভবোধ। এদের হাতে জিম্মি হয়ে কেমন কাটতে পারে দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা? অবশ্যই আতংক ও প্রাণের ভয়ই মানুষের সঙ্গী হবে সে সময়। এমন ভয়াবহ সুঃস্বপ্নের অভিজ্ঞতাই স্বজনদের কাছে বর্ণনা করেছেন গুলশানের হলি আর্টিজেন বেকারিতে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা ব্যক্তিরা।
শুক্রবার এই রেস্তোরায় ডুকে বিদেশিসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে একদল বন্দুকধারী । সকালে কমান্ডো অভিযানে মুক্ত হন তাদের অনেকে।
এদের মধ্যে রয়েছেন প্রকৌশলী হাসনাত করিম। তার মায়ের কাছ থেকে জানা যায় জিম্মি অবস্থার ১৮ ঘন্টার সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা।
১৩ বছর বয়সী সন্তানের জন্মদিন উদযাপন করতে স্পেনিশ এই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন হাসনাত করিম। তার সঙ্গে ছিল স্ত্রী শারমিন পারভীন এবং ৮ বছর বয়সী অন্য সন্তান।
রাতভর আটক থাকার পর সকাল ৮টার দিকে কমান্ডো অভিযানে হাসনাতের পরিবার উদ্ধার পায় বলে জানান তার মা। সন্তান, পূত্রবধূ ও নাতনীদের জন্য স্বামী এমআর করিমকে সঙ্গে নিয়ে সারারাত গুলশানে ছিলেন তিনি।
ছেলেকে পাওয়ার পর হাসনাতের মা বলেন, “ভেতরে ৭ জন বাংলাদেশি, একজন ভারতীয়র পাশাপাশি আরও ২০-২২জন বিদেশি ছিল। আক্রমণকারীরা ছিল ৫ জন।”
তিনি বলেন, “জিম্মিকারীরা বাংলাদেশি মুসলমানদের সুরা পড়তে বলে। সুরা পড়তে পারার পর তাদেরকে রাতে খেতেও দেওয়া হয়। পারভীন হিজাব পরা থাকায় খাতির করা হয়।”
ক্যাফেটিতে থাকা বিদেশি কয়েকজনকে রাতেই হত্যা করা হয় বলে হাসনাত তার মাকে জানিয়েছেন। ভেতরে লাশ আছে জানালেও কয়জন নিহত হন এবং তারা কারা, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু জানায়নি।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে বলে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছে। তবে এই সংগঠনটির তৎপরতার খবর বাংলাদেশ সরকার নাকচ করে আসছে।
হলি আর্টিজন বেকারি গুলশান এলাকার বিদেশিদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। সেখানে লনে অনেকই দেখা যেত চাদর বিছিয়ে রোদ পোহাতে। সবুজ লনে শিশুরাও খেলার পর্যাপ্ত জায়গা পেয়ে ছোটাছুটি করত।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া